আগুন নিয়ে যারা খেলছে তাদের ছাড়া হবে না: প্রধানমন্ত্রী

Tweet

PM visit gramentsদৈনন্দিন ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ধ্বংসযজ্ঞে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যারা আগুন নিয়ে খেলছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে,  তাদের কোনোভাবেই ছাড়া হবে না। আজ মঙ্গলবার গাজীপুর সদর উপজেলার কোনাবাড়ীর জরুন এলাকায় গত ২৯ নভেম্বর রাতে ‘বিক্ষুব্ধ’ শ্রমিকদের দেওয়া আগুনে পুড়ে যাওয়া স্ট্যান্ডার্ড পোশাক কারখানা পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগুনে পুড়িয়ে এমন করে কারখানা ধ্বংস করা কেবল কারখানা ধ্বংস নয়, হাজার হাজার পরিবারকে ধ্বংস করা। মানুষের জীবন-জীবিকাকে ধ্বংস করা, দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা। এই ধ্বংসের খেলাটা কারা করছে, এটা বের করতে হবে। অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম, গাজীপুর-১ আসনের সাংসদ আ ক ম মোজাম্মেল হক ও স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের মজুরি পাঁচ বছরের মধ্যে এক হাজার ৬০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা করা কোনো উন্নত বিশ্বের পক্ষে সম্ভব হবে না। শ্রমিকেরা তা মেনে নিয়েছে। তার পরও তাদের আন্দোলন করতে কেউ উসকানি দিচ্ছে। এই কারখানার আগুন লাগানোর ঘটনা সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত বলেও তিনি জানান। এ সময় কারখানায় নাশকতা থেকে রক্ষায় মালিক-শ্রমিকদের নিয়ে স্কোয়াড গঠন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তারা সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে।
দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পুড়ে যাওয়া কারখানা আবার চালু করতে সব ধরনের সহায়তার ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ সময় তিনি অবরোধের নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা এবং সব ধরনের নাশকতার জন্য বিরোধী দলকে দায়ী করে তাদের কঠোর সমালোচনা করেন।
মসজিদের মাইকে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের প্রকৃত ধর্মবিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে না।
স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমি তিলে তিলে যে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছি, আগুনে পুড়ে তার সবই শেষ হয়ে গেছে। আমি আজ নিঃস্ব। আমি নদীভাঙা এলাকার মানুষ। আমি নদীভাঙা ও গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছি। আমি যাদের এত ভালোবেসেছি, তারাই আমার কারখানায় আগুন দিল। মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করে এই প্রতিদান পেলাম। সরকার যদি সহযোগিতা করে, তবে আবার হয়তো নতুন করে শুরু করতে পারব।’
এর আগে বেলা সোয়া দুইটার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারখানা চত্বরে পৌঁছালে কারখানার মালিক মোশাররফ হোসেন, বিজিএমই, বিকেএমই ও জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী পুড়ে যাওয়া কারখানা ঘুরে দেখেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ ও সাবেক সভাপতি আনিসুল হক, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা জিয়াউদ্দিন বাবলু, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক মো. নূরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শাহনেওয়াজ দিলরুবা খান, পুলিশ সুপার আবদুল বাতেন প্রমুখ।

Leave a Reply