৭০,০০০ ফিলিস্তিনি উচ্ছেদ পরিকল্পনার প্রতিবাদ

Tweet

Filistaniদৈনন্দিন ডেস্ক:
৭০,০০০ ফিলিস্তিনি বেদুঈনকে তাদের ঐতিহাসিক মরুভূমি থেকে ইসরাইলের উচ্ছেদ পরিকল্পনার বিরোধিতা করে বৃটেনের ৫০ জনের বেশি প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। এদের মধ্যে প্রখ্যাত শিল্পী, সংগীতকার, লেখকও রয়েছেন। তারা সবাই ইসরাইলের এ ধরনের পরিকল্পনাকে জতিসত্তা বিনাস বলে উল্লেখ করে এর সমালোচনা করেছেন। শনিবার এ পরিকল্পনার প্রতিবাদ দিবস পালনের অংশ হিসেবেই বৃটেনের গার্ডিয়ান পত্রিকাতে চিঠিটি প্রকাশ করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত ইসরাইলের পার্লামেন্টে আনা একটি বিল ফিলিস্তিনসহ আরো প্রায় ২৪টি দেশ আপত্তি জানিয়েছে। এ বিলটি এ বছরের শেষ নাগাদ চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চিঠিতে বলা হয়েছে নেজেভ মরুভূমি থেকে প্রায় ৩৫টি ‘অচিহ্নিত’ গ্রাম উচ্ছেদ বা ধ্বংস করার মানে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়ি এবং ভূমি থেকে জোর করে উচ্ছেদ করা এবং পরিকল্পিতভাবে তাদের প্রতি বৈষম্য এবং বিভেদ সৃষ্টি করা। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন শিল্পী অ্যান্থনি গর্মলে, অভিনেত্রী জুলি ক্রিস্টি, চলচ্চিত্র পরিচালক মাইক লেইগ এবং সংগীতজ্ঞ ব্যায়ান ইনোর মতো ব্যক্তিত্বরা। তারা সবাই বৃটিশ সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন ইসরাইলকে যেন এর মানবাধিকার রেকর্ড এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে বাধ্য করা হয়। তবে ইসরাইলের দৃষ্টিতে প্রাওয়ের প্ল্যানের উদ্দেশ্য হচ্ছে নেজেভ মরুভূমির অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং রাষ্ট্রের কাছে স্বীকৃত নয় এমন গ্রামে বসবাসকারি বেদুঈন ফিলিস্তিনিদের নিয়ন্ত্রণ করা। এসব গ্রামের জনগণকে অন্য শহরে স্থানান্তর করে সেখানে নতুন করে ইহুদি বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে আরবদের জন্য ইসরাইলভিত্তিক মানবাধিকার এবং আইনি সহায়তামূলক সংস্থা আদালাহ বলেছে এ বিলটির মূল উদ্দেশ্য হলো বেদুঈনদের তাদের ভূমির সঙ্গে চূড়ান্তভাবে চিরতরে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে দেয়া। নেজেভের ‘অচিহ্নিত’ গ্রামগুলোতে পানি, বিদ্যুৎ, টেলিফোন, রাস্তাঘাট, স্কুল এবং ক্লিনিকের মতো মৌলিক সেবার কোন ধরনের ব্যবস্থা নেই। এর মোট জনসংখ্যা কয়েক শত থেকে ২০০০ পর্যন্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। নেজেভের মোট জনসংখ্যার ৩০ ভাগ বেদুঈন হলেও তাদের গ্রাম মাত্র ২.৫ ভাগ ভূমি দখল করে রেখেছে। ১৯৪৮ সালের ইসরাইল রাষ্ট্র সৃষ্টি হবার আগে তারা সাড়া মরুভূমিজুড়েই ইচ্ছে মতো ঘুরে বেড়াতেন। কিন্তু এখন ওই অঞ্চলের দুই-তৃতীয়াংশই সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রাওয়ের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৯৫০ এর দশকে ইসরাইলের নাগরিকত্ব গ্রহণকারী ৪০,০০০ থেকে ৭০,০০০ বেদুঈনকে ৭টি জনবহুল, দারিদ্র্যপিষ্ট, অপরাধপ্রবণ রাষ্ট্র পরিকল্পিত শহরে সরিয়ে নেয়া হবে। ইসরাইল সরকার বলছে এর মধ্য দিয়ে বেদুঈনরা আধুনিক সমাজে বসবাসের সুযোগ পাবে এবং তারা নিয়মিত কাজ পাবে, সন্তানদের তারা মূল ধারার স্কুলে পাঠাতে পারবে। তাদের মরুভূমি থেকে সরে আসার জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণও দেয়া হবে বলে ইসরাইল সরকার জানিয়েছে।

Leave a Reply