মাধবপুর হ্রদ
পর্যটন ডেস্ক:
মাধবপুর চা-বাগানের কাঁচা মাটির পথ ধরে কিছু দূর এগোলেই চোখে পড়ে দুই পাশে মেহগনি, নিম, অর্জুনসহ বিভিন্ন জাতের গাছ। সেই লালচে মাটির পথ দিয়ে কিছুদূর গিয়েই চোখে পড়ে জলের আভাস। বাইরে থেকে কিছু বোঝার উপায় নেই টিলার পাঁজর ঘেঁষে এমন টলটলে জলের ভাসান। সেই জলের বুকে ১২ মাসই কমবেশি ভেসে বেড়ায় নানা জাতের হাঁস, সরালি, পানকৌড়ি, জলপিপি…। শীতকালে অতিথি পাখির দল আসে এই হ্রদে। হ্রদের জলে গোলপাতার ফাঁকে ফাঁকে ফুটে আছে নীল শাপলা। হ্রদের দুই পাশে টিলায় টিলায় ছড়ানো চায়ের গাছ। ছায়াবৃক্ষ। অচেনা ঝোপঝাড়ে ফুটে আছে নানা জাতের সাদা, কালচে, গোলাপি রঙের মায়া লাগা বুনো ফুল। ঝোপের ফাঁকে ফাঁকে দেখা মেলে ভাঁট ফুলের।
মাধবপুর লেকের চারপাশে সারা দিন আনমনে ঘুরে বেড়ানো, ক্লান্তি পেলে বসে বুনো নির্জনতায় ডুবে থাকা। চা-বাগান কর্তৃপক্ষ চা-বাগানের টিলার নিচে লেকের পাড় ঘেঁষে হাঁটার জন্য সরু পথ করে দিয়েছে। টিলার ওপর আছে খড়ের তৈরি তাঁবু। আর টিলার ওপর থেকে যেদিকেই চোখ যায় বনের নীল রেখা। পূর্ব দিকে বহু দূরের একটি পাহাড়ের ক্ষীণ আভাস দেখা যায়, সেটি ভারতের পাহাড়। মাধবপুর লেকে একসঙ্গে জল, পাহাড়, চা-বাগান- একটা বুনো নির্জনতা আছে। তবে চা-বাগান কর্তৃপক্ষের নির্দেশ হলো সন্ধ্যা ছয়টার আগেই সেই জায়গাটি থেকে বেরিয়ে পড়তে হবে। ভানুগাছ-বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান সড়কের শেষ প্রান্তে ধলই সীমান্ত। সেখানে রয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ। স্মৃতিসৌধের স্থানটির দূরত্ব মাধবপুর হ্রদ থেকে পাঁচ-ছয় কিলোমিটারের মতো। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং দেখতেও চমত্কার জায়গাটি এক ফাঁকে ঘুরে আসা যায়। একসঙ্গে দুটি জায়গায় সহজেই ঘোরা যেতে পারে।
কীভাবে যাবেন
মাধবপুর হ্রদ ও বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধে যেতে হলে ট্রেন বা বাসে করে শ্রীমঙ্গল অথবা কমলগঞ্জে আসতে হবে। তারপর কমলগঞ্জের ভানুগাছ চৌমোহনা থেকে মাধবপুর হ্রদ বা স্মৃতিসৌধে ব্যক্তিগত গাড়ি কিংবা বাসে করে সেখানে যাওয়া যায়। রাতে থাকতে হলে শ্রীমঙ্গলে বেশ কিছু আবাসিক হোটেল আছে। তার যেকোনো একটিতে থাকা যেতে পারে।