আত্মরক্ষার অধিকারের সীমা

Tweet

Karate Kickমানবাধিকার ডেস্ক:
ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার অধিকার প্রত্যেক ব্যক্তির মানবাধিকার। যেকোনো আক্রমণ প্রতিহত করে নিজেকে তা থেকে রক্ষা করাই প্রতিরক্ষার অধিকারের মূল কথা।
প্রত্যেক ব্যক্তি তার দেহ ও সুনাম বা মর্যাদা রক্ষা করার জন্য আত্মরক্ষার সুযোগ নিতে পারে। পৃথিবীর সব দেশের আইনই মানুষকে এ অধিকার প্রদান করেছে। মানবাধিকারের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে মানুষের এই অধিকারের স্বীকৃতি মেলে।
আমাদের দেশেও দণ্ডবিধিতে দেহ, সম্পদ ও সুনামের মর্যাদা রক্ষার কথা বলা আছে। দেহের ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার অধিকার কিছু বিধি-নিষেধ সাপেক্ষে যেকোনো নাগরিকই প্রয়োগ করতে পারে।
দণ্ডবিধিতে বলা আছে কোনো ব্যক্তি তার দেহকে আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য এমনকি কারো মৃত্যুও ঘটাতে পারে। তবে তা অবশ্যই কিছু বিধিনিষেধ সাপেক্ষে। আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য পাল্টা আক্রমণ করার যৌক্তিকতা ছিল কিনা তা আদালই বিবেচনা করবে। আর আক্রমণ প্রতিহতকারীকেই তা প্রমাণ করতে হবে।
কোনো ব্যক্তি কোন কোন ক্ষেত্রে পাল্টা আক্রমণ করতে পারে:
- যদি কারো মনে এরূপ যুক্তিসঙ্গত আতঙ্ক সৃষ্টি হয় যে, যাতে সে মনে করে যে মৃত্যুই হবে অনুরূপ আক্রমনের পরিণতি। সেক্ষেত্রে সে ব্যক্তি আক্রমণ প্রতিহত করে মৃত্যুও ঘটাতে পারে।
-যদি কারো মনে এরূপ যুক্তিসঙ্গত আতঙ্ক সৃষ্টি হয় যে, যাতে সে মনে করে যে গুরুতর আঘাতই হবে অনুরূপ আক্রমনের পরিণতি। সেক্ষেত্রে সে ব্যক্তি আক্রমণ প্রতিহত করে মৃত্যুও ঘটাতে পারে।
-যদি কোনো নারী মনে করে যে, যদি সে আক্রমণ প্রতিহত না করে তবে তিনি ধর্ষণের শিকার হতে পারেন। অপ্রকৃত কাম-লালসা চরিতার্থকরণের অভিপ্রায়ে কেউ আক্রমণ করলেও তিনি প্রতিহত করতে পারেন। যদি তাতে আক্রমণকারীর মৃত্যুও ঘটে সেক্ষেত্রেও তিনি নির্দোষ বলে প্রতিয়মান হবে।
-অপহরণের অভিপ্রায়ে কেউ আক্রমণ করলেও ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।
-যদি কোনো ব্যক্তিতে আটক করে রাখা হয় এবং তাতে আটককৃত ব্যক্তির যদি মনে হয় যে তিনি এর থেকে মুক্ত হতে পারবেন না বা মুক্তির জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের আশ্রয় নিতে সক্ষম হবেন না।
যদি অপরাধটি উপরোক্ত অপরাধগুলো করার জন্য না হয়, তবে ব্যক্তিগত দৈহিক প্রতিরক্ষার অধিকার স্বেচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণকারীর মৃত্যু ঘটানোর জন্য প্রযোজ্য হবে না।
একজন ব্যক্তি তখনই ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন যখন তার মনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় ও তা বহাল থাকে। যদি তার ভীতি বা আতঙ্ক কেটে যায় ও মৃত্যু বা উপরোক্ত ক্ষতিসমূহ সাধন করার সম্ভাবনা কেটে যায় তখন তিনি আর আত্মরক্ষার অধিকারী থাকেন না।
কাজেই, আত্মরক্ষার নামে অপরের ক্ষতি সাধন করা কোনোভাবেই আইন-আদালতে গ্রহণযোগ্য নয়।

Leave a Reply