দিনাজপুর রাজবাড়ি

পর্যটন ডেস্ক:
দিনাজপুর রাজবাড়ি দিনাজপুর শহরের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত ধ্বংসপ্রাপ্ত নিদর্শন মাত্র। আদিতে প্রতিরক্ষা পরিখা ও উচুঁ প্রাচীর বেষ্টিত দিনাজপুর রাজবাড়ির বর্তমান পরিত্যক্ত ধ্বংসস্তুপে প্রবেশের জন্য পশ্চিম দিকে একটি উচুঁ খিলানপথ রয়েছে। প্রবেশ পথের বাম দিকে মূল প্রাসাদ এলাকার মধ্যে খোলা জায়গায় রয়েছে একটি কৃষ্ণ মন্দির। ডানদিকে রয়েছে প্রাসাদের বহির্বাটির কিছু ধ্বংসাবশেষ ও অপর একটি প্রবেশ পথ। বর্গাকার চত্বরটির পূর্বপার্শ্বে রয়েছে চত্বরমূখী সমতল ছাদ বিশিষ্ট একটি মন্দির। চারটি সেমি-কোরিনাথিয়ান স্তম্ভের উপর মন্দিরের সামনের বারান্দা এবং অপর এক সেট কলামের উপর মূল হল ঘরটির ছাদ ন্যস্ত।
এ সকল দালান-কোঠা এবং পূর্ব ও দক্ষিণের দুটি বৃহৎ দিঘি, পরিখা, বাগান, একটি বিলুপ্ত চিড়িয়াখানা, একটি টেনিস কোর্ট, কাচারি ও কুমার হাউসসহ রাজবাড়িটি প্রায় ১৬.৪১ একর এলাকা নিয়ে বিস্তৃত। মূল মহল ও এর সংলগ্ন পরিখা সম্ভবতঃ অষ্টাদশ শতাব্দীতে মহারাজা প্রাণনাথ ও তাঁর পোষ্যপুত্র রামনাথ নির্মাণ করেছিলেন। প্রাসাদটি নির্মিত হয়েছিল ইউরোপীয়, মুসলিম ও হিন্দু রীতির এক অদ্ভুত সংমিশ্রণে, যা খুব একটি দৃষ্টিনন্দন হয়নি। রামডাঙ্গা নামক দুটি সমান্তরাল পরিখা প্রাসাদটি ঘিরে ছিল। পরিখাটি সম্ভবত আলীবর্দী খানের শাসনামলে রংপুরের ফৌজদার সৈয়দ আহমেদ খানের আক্রমণের পরই রামনাথ খনন করেছিলেন।
আয়না মহল নামে পরিচিত পূর্বমুখী দ্বিতল মূল প্রাসাদটির অধিকাংশই এখন ধসে পড়েছে। এ ধ্বংসাবশেষে অথবা টিকে থাকা সামান্য কিছু নিদর্শনের মাঝে বা চুর্ণ-বিচুর্ণ পাথরের কোথাও এর পূর্বের কাচের মোজাইক চোখে পড়ে না। পূর্বদিকের ৪৫.৭২ মিটার প্রাসাদে ৩.০৫ মিটার প্রশস্ত একটি বারান্দ রয়েছে। ব্যালকনির উভয় পার্শ্বে দুটি প্রশস্ত প্যাঁচানো সিড়ি দোতালায় উঠে গেছে। সম্মখভাগের বারান্দাটির নিচে রয়েছে গ্রিক আয়োনিক রীতির স্তম্ভের সারি। জোডায় জোড়ায় স্থাপিত স্তম্ভগুলিতে আবার রয়েছে গোলাকৃতির ব্যান্ড। একটি মাত্র আয়তাকার প্যানেল ব্যতীত উপরের প্যারাপেটটি সমতল। প্যারাপেট থেকে সামান্য উচু আয়তাকার প্যানেলটিতে রয়েছে রাজকীয় চিহ্নের মাঝে রিলিফ করা মুখোমুখি দুটি হাতি ও মুকুটের নকসা। মহলটির মেঝে সাদা-কালো মার্বেল পাথর দ্বারা এবং ছাদ, বিশেষ করে দরবার হল, জলসা হল, তোষাখানা ও পাঠাগার, স্টাকো পদ্ধতিতে চকচকে করা হয়েছে।
পার্শ্ববর্তী দৃশ্যাবলী

কড়াই বিল
দিনাজপুর শহর হতে পশ্চিমে ১৫ কিমি দূরে বিরল উপজেলায় কড়াই বিলের অবস্থান। শীতকালে এখানে সাইবেরিয়া অঞ্চল হতে প্রচুর পাখির আগমন ঘটে।

সিংড়া ফরেস্ট
বীরগঞ্জ উপজেলার দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও মহাসড়কের পূর্বে সিংড়া ফরেস্ট অবস্থিত। এই বনভূমিতে প্রচুর শালগাছ দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া ইদানিং বন বিভাগের লাগানো ইউক্যালিপ্টাস ও আকাশমনি গাছ বনকে করেছে আরো সমৃদ্ধ। বনের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট একটি নদী দর্শনার্থীদের মন ভরিয়ে দেয়।

হিলি স্থলবন্দর
দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলায় হিলি স্থলবন্দর অবস্থিত। এটি দিনাজপুর জেলা শহর থেকে ৬০ কি: মি: দক্ষিনে জেলা সীমানায় অবস্থিত। হিলি স্থলবন্দরের বাংলাদেশ অংশে রয়েছে দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলা এবং ভারত অংশে রয়েছে দক্ষিন দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট। বন্দরের আমদানী ও রফতানী হয় সড়ক পথে।
যেভাবে যেতে হবে

প্রথমেই আপনাকে যেতে হবে দিনাজপুর। বাস ও ট্রেন দুই ভাবেই যাওয়া যায়।
ট্রেন : ট্রেনে যাওয়া সবচাইতে আরামদায়ক ও বুদ্ধিমানের কাজ। ঢাকার কমলাপুর থেকে ২টি আন্তঃনগর ট্রেন দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। দ্রুতযান এক্সপ্রেস কমলাপুর থেকে সন্ধ্যা ৭.৫০ মিনিটে ছেড়ে যায় এবং দিনাজপুর গিয়ে পৌছায় সকাল ৫.১০ মিনিটে। অপরদিকে একতা এক্সপ্রেস সকাল ৯.৫০ মিনিটে কমলাপুর থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৭.২০ মিনিটে দিনাজপুর গিয়ে পৌছায়।

দ্রুতযান এক্সপ্রেস > বুধবার > ঢাকা থেকে ছাড়ে ১৯:৫০ মি. > দিনাজপুর পৌছায় ০৫:১০ মিনিটে
দ্রুতযান এক্সপ্রেস > বুধবার > দিনাজপুর থেকে ছাড়ে ০৮:২০ মি. > ঢাকায় পৌছায় ১৮:১৫ মিনিটে
একতা এক্সপ্রেস > মঙ্গলবার > ঢাকা থেকে ছাড়ে ০৯:৫০ মি. > দিনাজপুর পৌছায় ১৯:২০ মিনিটে
একতা এক্সপ্রেস > েসামবার > দিনাজপুর থেকে ছাড়ে ২২:০০ মি. > ঢাকায় পৌছায় ০৭:৩৫ মিনিটে

বাস : ঢাকা-দিনাজপুর বাস সার্ভিস ও খুব ভাল। রাস্তা ভাল হওয়ায় বাসে যেতে কোন প্রকার সমস্যা হয়না। ঢাকার গাবতলী হতে নাবিল পরিবহন, হানিফ পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন সহ বেশ কয়েকটি বাস সার্ভিস রয়েছে। তাছাড়া উত্তরা হতেও কিছূ পরিবহন দিনাজপুর যায়।
কোথায় থাকবেন

দিনাজপুর শহরে থাকার জন্য বাংলাদেশ পর্যটন কপোর্রেশন এর মোটেল সহ অনেকগুলো ব্যাক্তিমালিকানাধীন হোটেল রয়েছে। আপনি চাইতে এখানে থাকতে পারেন। হোটেল ডায়মন্ড, পূর্নভবা,হোটেল আল রশিদ উল্লেখযোগ্য।

হোটেল বুকিং এর জন্য নিচের নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন:

পর্যটর মোটেল : ০৫৩১- ৬৪৭১৮
হোটেল তিলত্তমা : ০৫৩১- ৬১২৭৯
হোটেল আল রশিদ : ০৫৩১-৬৫৬৫৮, ৬৪২৫১
হোটেল গোল্ডেন টাওয়ান : ০৫৩১- ৬৫৯২০
হোটেল  ইউনিক : ০৫৩১-৫২২০৩, ০১৭৩৬৩৩৫২৬৪।

অনুমিত খরচ
ট্রেন ভাড়া
প্রথম শ্রেনী বার্থ কম্পার্টমেন্ট > ৫৩৫ টাকা
প্রথম শ্রেনী সিট > ৩৭০ টাকা
শোভন চেয়ার > ২৫০ টাকা
শোভন সিট > ১৮০ টাকা
বাস ভাড়া
ঢাকা থেকে দিনাজপুর : ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা
রংপুর থেকে দিনাজপুর : ১০০ টাকা
হোটেল ভাড়া
পর্যটন মোটেল : ৮০০ – ১৫০০ টাকা
হোটেল ডায়মন্ড : ৫০০ – ৬০০ টাকা
হোটেল পুর্নভবা : ৩০০ – ৫০০ টাকা
হোটেল আল রশিদ : ৩০০ – ৫০০ টাকা
সূত্র: http://travelobd.com

1 Comment

  1. lucikapur.

    Awesome palace???????????????????????????????????????

Reply to lucikapur. comment